কোচিং সেন্টারের আড়ালে সনদের কারবার, গ্রেফতার চার

রাজধানীর গুলশান ও বাড্ডায় অভিযান চালিয়ে কোচিং সেন্টারের আড়ালে জাল শিক্ষা সনদ তৈরি ও বিক্রি চক্রের চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৩। গ্রেফতাররা হলো- আজিজুর রহমান, রফিকুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম ও হায়দার আলী। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে জাল সনদ ও সনদ তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবিএম ফাইজুল ইসলাম রোববার বিকেলে ডেইলি বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিশেষ সূত্রে সংবাদ পাওয়া যায়, বারিধারা জেনারেল হাসপাতালের ৮ তলার প্রাইভেট স্ট্যাডি একাডেমি নামে একটি প্রতিষ্ঠান ও মেরুল বাড্ডার খ-২১৪/ই নম্বর প্রগতি টাওয়ার ৯ম তলায় কোচিং সেন্টারের আড়ালে জাল সার্টিফিকেটের ব্যবসা করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক জিয়াউর রহমান। এ তথ্যে বারিধারা জেনারেল হাসপাতালের ৮তলায় প্রাইভেট স্ট্যাডি একাডেমিতে অভিযান চালানো হয়। র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর সময় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যে রাতে মেরুল বাড্ডার কোচিং সেন্টারে অভিযান চালানো হয়।

উদ্ধারকৃত সরঞ্জাম- ডেইলি বাংলাদেশ

তিনি আরো জানান, মেরুল বাড্ডার প্রগতি টাওয়ারে অভিযানে গেলে প্রথমে কর্মচারীরা দরজা খুলতে চায়নি। অনেক পরে তারা দরজা খুলে দেয়। অভিযান দু’টিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি ও এইচএসসি সার্টিফিকেট একটি, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কশীট তিনটি, প্রসংশাপত্র একটি, প্রাইভেট স্ট্যাডি একডেমিতে ভর্তি ফরম প্যাড দুটি, বিভিন্ন সার্টিফিকেট প্রত্যাশী ব্যক্তিদের তথ্যসম্বলিত রেজিস্টার তিনটি, বিভিন্ন সার্টিফিকেট প্রত্যাশী ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বর লেখা ডাইরি চারটি, প্রাইভেট এক্সাম সেন্টার বিডি ভর্তির টাকার রশিদ বই একটি, লিফলেট ১৫০টি, মোবাইল ১৩টি, পাসপোর্ট পাঁচটি, জিয়াউর রহমান নামীয় পরিচয়পত্র একটি (যাতে রাজিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান লেখা আছে),  দুটি কালো ক্লিপ বোর্ডে থাকা বিভিন্ন ব্যক্তির মূল সার্টিফিকেট ও সার্টিফিকেটের ফটোকপি, বিভিন্ন ব্যক্তির তথ্যসম্বলিত ডাইরি দুটি,  গ্লাজগো কমার্স কলেজে ভর্তির রশিদ বই একটি, জিয়াউর রহমানের টিআইএন সার্টিফিকেট একটি, অ্যাডুকেশন হেল্পলাইন লিমিটেডের মানি রশিদ বই একটি এবং টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথোপকথনের একটি কৌশলপত্র উদ্ধার করা হয়। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিদেরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে জিয়াউর রহমান কোচিং বাণিজ্যের আড়ালে  খোলামেলাভাবে সার্টিফিকেট জালিয়াতির ব্যবসা করছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যেকোনো বছরের অনার্স, মাস্টার্স, ডিগ্রী পাশের সার্টিফিকেট, সব বোর্ডের এসএসসি ও এইচএসসি পাশের সার্টিফিকেট, উন্মক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট এবং সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট প্রতিষ্ঠানে ভর্তির দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে সরবরাহ করে তারা। এভাবে তারা মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথাও স্বীকার করেছে।