ব্রেকিং:
মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা ফেনীতে করোনার নমুনা সংগ্রহ করবে স্বাস্থ্যকর্মীরা ফেনীর বিভিন্নস্থানে মোবাইল কোটের অভিযান : ১৪ জনের দন্ড ফেনীতে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌছে দিয়েছে ছাত্রলীগ করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের ফেনীর ৭ সরকারি কলেজের একদিনের বেতন ত্রাণ তহবিলে ফেনী ধলিয়ায় গ্রাম পুলিশের বাড়িতে হামলা, আহত ২ মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? ফেনীতে বাড়তি দামে পণ্য বেচায় ৭ দোকানের জরিমানা দেশে করোনায় আক্রান্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার, একদিনে মৃত্যু ৫ যুক্তরাষ্ট্রে করোনা জয় করলেন ১ লাখেরও বেশি মানুষ ফেনীতে গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার ফেনী শহরে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার প্রদান ফেনীতে ডাক্তারদের সুরক্ষা ও রোগীদের চিকিৎসা সামগ্রী দিয়েছে বিএমএ করোনায় মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৯২ হাজার ছাড়ালো
  • রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

‘হয় সদায় নয় বিদায়’

ফেনীর হালচাল

প্রকাশিত: ৮ মার্চ ২০২০  

৬ জানুয়ারি। বনানীর গোল্ডেন টিউলিপ ফোর স্টার হোটেল থেকে কাজ শেষে রাত ১১টার দিকে বাসায় (শেওড়ায়) ফিরছিলেন মিজানুর রহমান (১৮) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। কাকলী থেকে ভাগাভাগি করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠেন। অটোরিকশার ভেতর দু’জন যাত্রী বসা ছিল যারা ছিনতাইকারী দলের সদস্য। চালক ছিলেন ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য নুরুল ইসলাম। অটোরিকশাটি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এলে একপর্যায়ে তারা মিজানের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে রাজধানীর হাতিরঝিল ফ্লাইওভার থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

গত এক মাসের ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন ফ্লাইওভারে পাওয়া যায় চারজনের মরদেহ। হত্যার ধরন একই রকম। সবার গলায় ছিলো গামছা প্যাঁচানো।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুর, টঙ্গী, সাইনবোর্ড, আশুলিয়া, জিরাবো, উত্তরা, আবদুল্লাহপুর, খিলক্ষেত, বাড্ডা, মহাখালী, রামপুরা, তেজগাঁও, কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী, ৩০০ ফিট এলাকায় ছিনতাইকারীদের বিচরণ বেশি। যাত্রী, চালক, হকার, ব্যবসায়ীসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিচয়েও তারা ছিনতাই করছে। ছিনতাই শেষে ভিকটিমকে হত্যা করতেও পিছপা হয়না তারা।

সম্প্রতি কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার আসামিদের জবানবন্দি থেকেই বেরিয়ে আসে হিংস্রতার এসব তথ্য। তাদের মতে ‘হয় সদায় নয় বিদায়’। অর্থাৎ হয় তারা সর্বস্ব কেড়ে নেবে, না হয় প্রাণে মেরে ফেলবে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা। অ্যাপস ভিত্তিক পাঠাও চালক মো. শামীম বেপারী বাবুর (২৮) মরদেহ পাওয়া যায় আশুলিয়ার কাঠগড়ার একটি বাঁশঝাড়ে। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অপরাধে ১৬ ফেব্রুয়ারি মামুনুর রশিদ (২২), মাহবুবুর রহমান (২০) এবং মোমিন মিয়া (২০) নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল শাফী উল্লাহ বুলবুল বলেন, মামুনুর রশিদ যাত্রীবেশে বাবুর মোটরসাইকেলে উঠে। মূলত তাদের টার্গেট ছিলো বাবুকে খুন করে তার মোটরসাইকেলটি ছিনতাই করা।

তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ছিনতাইকারীরা তাদের কৌশল পাল্টেছে।  কৌশল হিসেবে কখনো তারা যাত্রী, কখনো বিয়ের জন্য গাড়ি ভাড়া করতো। টাকা-পয়সা, মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কার তাদের টার্গেট নয়। তারা মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, সিএনজি, অটোরিকশার মতো ছোট যানবাহন ছিনতাই করে।

৩ জানুয়ারি খিলক্ষেতে কুড়িল বিশ্বরোডসংলগ্ন ফ্লাইওভার থেকে মনির হোসেন নামের এক টেইলার মাস্টারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অন্যদিকে, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আক্তার হোসেন নামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে হত্যার পর লাশ ফেলে রাখা হয় কুড়িল ফ্লাইওভারে। তার গলায়ও প্যাঁচানো ছিল গামছা।

গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে ছিনতাইকারী নুরুল জানিয়েছে, ৯ সদস্যের ছিনতাইয়ের টিম তাদের। তিনটি টিমে ভাগ হয়ে প্রতি রাতে তারা অপারেশনে নামেন। পাঁচ–ছয় মাসে প্রায় ৬০০ ছিনতাই করেছে তারা। অনেকেই ২ হাজার থেকে ২৫’শ ছিনতাই করেছে। এক রাতে সর্বোচ্চ ছয়টি পর্যন্ত ছিনতাইয়ের রেকর্ড আছে। বেশ কয়েকজনকে হত্যাসহ অজ্ঞান বা অর্ধমৃত অবস্থায় ৩০-৪০ যাত্রীকে ফ্লাইওভার বা নির্জন অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানে অটোরিকশা থেকে ফেলে দেয়ার কথাও স্বীকার করে নুরুল।

একেকটি দল দিনে অন্তত দু’জনকে টার্গেট করে। কোনো কোনো দিন চার-পাঁচজনও তাদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছে। নুরুল নিজেই প্রায় চারশ’ ছিনতাইয়ে জড়িত ছিল। এর মধ্যে আটজন তাদের হাতে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছেন। এছাড়া ৩০-৪০ জনের কাছ থেকে সবকিছু হাতিয়ে নেয়ার পর তাদের চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দেয়া হয়েছে।

গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর। রাজধানীর খিলক্ষেত থেকে যাত্রাবাড়ীর উদ্দেশ্যে অনাবিল পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন মাহামুদুল হাসান নামের এক ব্যক্তি। শনিরআখড়া ফুটওভার ব্রিজের নিচে পৌঁছার পর ‘র‌্যাবের জ্যাকেট’ পরিহিত তিন-চার জন বাসটিতে ওঠেন। র‌্যাব সদস্য পরিচয়ে পিস্তল উঁচিয়ে তারা হাসানকে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামায়। এরপর সঙ্গে থাকা তার আইফোন ও তিন লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।

ছিনতাই চক্র সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ছিনতাইয়ে তারা বেশ কিছু কৌশল ব্যবহার করে। বেশিরভাগ সদস্য থাকে লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায়। তাদের গলায় থাকে গামছা, হাতে বস্তা। পুলিশ কখনো জানতে চাইলে নিজেদের হকার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলে, কারওয়ান বাজার থেকে মালপত্র কিনতে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্টেশন ও জনবহুল এলাকায় গিয়ে শেয়ারে সিএনজি অটোরিকশায় রাতে যাত্রীর ছদ্মবেশ ধারণ করে।

গত ২৪ জানুয়ারি রাতে রাজধানীর খিলগাঁও ও নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) গোয়েন্দা (পূর্ব) বিভাগের একটি দল। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. সুজন শেখ, মো. মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মানিক, মো. ইমন, মো. লিটন সরদার ও মো. রমজান হোসেন।

ডিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের কাছ থেকে পিস্তল, চাপাতি ও সাতটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে। মানিকের বিরুদ্ধেই রয়েছে ১৯টি মামলা। সে এর আগেও গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছে। জামিনে বের হয়ে আবারো একই কাজ করছে।

শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের ৪২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। ছিনতাইকারী ও সালাম পার্টির সক্রিয় সদস্য তারা। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন জানান, বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ছিনতাই ও ছিনতাইয়ের সময় হত্যার মতো ঘটনার পর এ ৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শনিবার ভোরে কমলাপুরে রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার সময় রিকশা থেকে পড়ে তারিনা বেগমের মৃত্যু বিষয়ে ডিবির এ  কর্মকর্তা বলেন, আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। এ ব্যাপারে মামলা হবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।

অপরাধীদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় ও পোশাক ব্যবহার সম্পর্কে জানতে মো. আবদুল বাতেন বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের পরিচয় দিলে তাদের অপরাধের কাজটা সহজ হয়। বহু আগে থেকেই অপরাধীরা এ কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে সাদা পোশাকের পুলিশ, ডিবি, র‌্যাব এ ধরনের পরিচয় দিতে অপরাধীরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আমরা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।

ফেনীর হালচাল
ফেনীর হালচাল