নিষিদ্ধ পপকর্ন যেভাবে সিনেমা হলের ‘অবিচ্ছেদ্য’ অংশ হলো
ফেনীর হালচাল
প্রকাশিত: ৯ জানুয়ারি ২০২০
সিনেমা হলে সিনেমা দেখা মানেই সঙ্গে থাকা চাই এক প্যাকেট পপকর্ন। মনে হয় পপকর্ন ছাড়া সিনেমা দেখাই সম্ভব নয়। তাছাড়া বাসায় মধ্যরাতেও টেলিভিশন দেখে পপকর্ন খাওয়ার মজাই আলাদা।
তবে সিনেমা হলে সবার হাতে হাতে পপকর্ন থাকা একটি নিয়মিত দৃশ্য। তবে জানলে অবাক হবেন, আজ থেকে একশ বছর আগে এমন ছিল না। তখন সিনেমা থিয়েটারে পপকর্ন নিয়ে খাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। শুধু পপকর্নই নয়, কোনো খাবারই নেয়া যেত না সিনেমা দেখার সময়। সেই নিষিদ্ধ পপকর্ন কীভাবে সিনেমা হলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেল আর কেনই বা নিষিদ্ধ ছিল তা নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।
পপকর্নের ইতিহাস নতুন নয়। প্রায় ৮,০০০ বছর আগে ভুট্টা চাষ করা হতো টিওসিন্টে থেকে। টিওসিন্টে হচ্ছে একপ্রকার বন্য ঘাস, যা দেখতে বর্তমানে আমাদের পরিচিত আধুনিক ভুট্টার মতো নয়। পপকর্ন হলো ভুট্টার শাঁসের স্ফীত রূপ। এটি প্রথমে মধ্য আমেরিকায় চাষ হতো। পরে এটি উত্তর ও দক্ষিণ অংশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে টিকে থাকে শুধু দক্ষিণ আমেরিকায়। এন্ড্রু স্মিথের ‘পপড কালচার: অ্যা সোশাল হিস্ট্রি অব পপকর্ন’ বইয়ে পপকর্নের ইতিহাস সম্পর্কে জানা যায়। তার ভাষায়,
উনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে উত্তর আমেরিকার তিমি শিকারীরা চিলিতে যায়। সেখানে তারা বিভিন্ন ধরনের পপকর্নের সঙ্গে পরিচিত হয়। তারা এগুলো পছন্দ করে। তাই সেখান থেকে তারা পপকর্ন নিউ ইংল্যান্ডে নিয়ে আসে।
পপকর্ন
সেই সময় থেকে পপকর্ন আমেরিকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিনোদনের ক্ষেত্রে পপকর্ন হয়ে ওঠে খাবারের অন্যতম একটি মেন্যু। এজন্য তখন প্রায় সকল বিনোদন কেন্দ্রেই পপকর্নের উপস্থিতি দেখা যায়। পপকর্নের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হলো এটি যেকোনো স্থানে তৈরি করা যেত। ১৮৮৫ সালে চার্লস ক্রেটর বাষ্পচালিত পপকর্ন তৈরির যন্ত্র আবিষ্কার করেন। ফলে এই যন্ত্র দিয়ে রাস্তাঘাটে যেকোনো স্থানে পপকর্ন তৈরি করে দ্রুত বিক্রি করা সম্ভব হয়। এতে রাস্তায় বা মাঠে-ময়দানে পপকর্ন বিক্রি অনেক বেড়ে যায়।
পপকর্ন মেশিন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেয়ার সুযোগ থাকায় আউটডোর স্পোর্টস, সার্কাস, মেলায় পপকর্ন অনেক জনপ্রিয়তা পায়। শুধুমাত্র বহিরাঙ্গনে সহজলভ্যতাই নয়, এর জনপ্রিয়তার আরেকটি কারণ ছিল রান্নাঘরের প্রয়োজনহীনতা। তখন আরেকটি স্ন্যাকস জাতীয় খাবার ছিল আলুর চিপস। কিন্তু সেটি রান্নাঘরে অনেক ক্ষুদ্র পরিসরে বানানো হতো। তাই আলুর চিপস ছিল জনতার ভিড়ে বিক্রির অনুপযোগী। পপকর্ন সেই সীমাবদ্ধতা দূর করে দেয়। এর আকর্ষণের আরেকটি কারণ এতে ব্যবহৃত বিশেষ ধরনের সুবাস। তবে বিভিন্ন স্থানে বিনোদনের অন্যতম সঙ্গী হওয়ার পরও সিনেমা থিয়েটারে পপকর্ন ব্রাত্যই হয়ে থাকে।
সিনেমা হলের বাইরে পপকর্ণ বিক্রেতা
বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে আমেরিকানদের বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে ওঠে নির্বাক সিনেমা। থিয়েটারে নির্বাক সিনেমা দেখার জন্য দর্শকদের ভিড় থাকতো প্রচুর। তবে থিয়েটার মালিকরা সে সুযোগ রেখেছিলেন শুধুমাত্র সমাজের অভিজাত শ্রেণীর জন্য। তখন শিক্ষিত লোকদের জন্যই মূলত থিয়েটারে সিনেমা প্রদর্শিত হতো। সিনেমা হলের মেঝেতে থাকতো আকর্ষণীয় লাল কার্পেট। দর্শকদের বসার জন্য বিশেষ কম্বলও থাকতো। পপকর্ন আনার সুযোগ দিলে দর্শকরা সেগুলো নোংরা করে ফেলতে পারেন। তাই থিয়েটার মালিকরা পপকর্ন নিষিদ্ধ রাখেন। তখন সিনেমা হল অনেকটা বর্তমান সময়ের অপেরার মতো ছিল। তাছাড়া পপকর্ন খাওয়ার শব্দে দর্শকদের সাবটাইটেল পড়ার সময় মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটতে পারে এই আশঙ্কাও ছিল।
১৯২৭ সালে সবাক সিনেমার যাত্রা শুরু হয়। নির্বাক সিনেমার সাবটাইটেল থাকার কারণে নিরক্ষর দর্শকরা তা উপভোগ করতে পারতো না। সবাক সিনেমা আসায় এই বাধা আর থাকে না। ফলে সকল শ্রেণির দর্শকের কাছে জনপ্রিয়তা পেল সিনেমা। তখন সিনেমা থিয়েটারে দর্শকদের আগমন আরো বাড়তে লাগলো। ১৯৩০ সালে সিনেমা থিয়েটারে প্রতি সপ্তাহে দর্শক সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৯০ মিলিয়নে। এই বিপুল পরিমাণ দর্শকের উপস্থিতিতে স্ন্যাকস জাতীয় খাবারের ব্যবসায় প্রচুর লাভের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সিনেমা থিয়েটারের মালিকরা তখনো দ্বিধান্বিত ছিলেন।
এ সময় শুরু হয় বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মহামন্দা। এটি পুরো ত্রিশের দশক জুড়ে থাকে, যা ‘দ্য গ্রেট ডিপ্রেশন’ নামে পরিচিত। তবে অন্যান্য ব্যবসা এই মহামন্দায় ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সিনেমা ও পপকর্নের জন্য এটি ছিল একটি বিশাল সুযোগ। তখন বিনোদনের সস্তা মাধ্যম সিনেমা হওয়ায় দর্শকরা এখানে ভিড় করে। তখন প্রতি ব্যাগ পপকর্নের দাম ছিল পাঁচ থেকে দশ সেন্টের মধ্যে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ছিল। পাইকারী হারে সরবরাহকারীদের জন্যও ছিল এটি একটি লাভজনক বিনিয়োগ। দশ ডলারের ব্যাগ কিনলে বছর চলে যেত। থিয়েটারের লোকরা এতে উদাসীন থাকলেও অন্যরা ঠিকই এই সুযোগটি গ্রহণ করলো।
শিশুদের কাছে পপকর্ণ বিক্রির একটি দৃশ্য
রাস্তার বিক্রেতারা তখন নিজেদের জন্য পপকর্ন মেশিন কিনলো। তারা থিয়েটারের বাইরে দর্শকদের কাছে পপকর্ন বিক্রি করা শুরু করলো। দর্শকরা সিনেমা থিয়েটারে প্রবেশের পূর্বে পপকর্ন কিনে খেত। অনেক দর্শকই লুকিয়ে পকেটে করে পপকর্ন নিয়ে যেত থিয়েটারে। তাই অনেক সিনেমা থিয়েটারের দেয়ালে লেখা থাকতো প্রবেশের পূর্বে পকেট থেকে পপকর্ন খালি করে আসতে। কিছু থিয়েটার যে পপকর্ন ব্যবসার কথা ভাবেনি এমন নয়। কিন্তু সমস্যা ছিল পপকর্ন তৈরির জন্য তাদের থিয়েটারে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু পপকর্ন হাতে দর্শকদের আগমন বাড়তে থাকায় থিয়েটার মালিকরা আর উপেক্ষা করতে পারলেন না।
থিয়েটার মালিকরা তখন পপকর্ন বিক্রেতাদের থিয়েটারের লবিতে পপকর্ন বিক্রির অনুমতি দেন। এতে বিক্রেতাদের কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি নেয়া হয়। বিক্রেতাদের তাতে কোনো আপত্তি ছিল না। কারণ এই সুবিধায় তাদের বিক্রি আরো বেড়ে যায়। একইসঙ্গে সিনেমা দেখতে আগত দর্শক ও রাস্তার পথচারী সবার কাছেই তাদের পপকর্ন বিক্রি হতে থাকে। এমনই এক সফল বিক্রেতা ছিলেন কানসাস সিটির বিধবা মহিলা জুলিয়া ব্রেডেন। তিনি লিনউড থিয়েটারের লবিতে পপকর্ন বিক্রি করতেন। ১৯৩১ সালের মধ্যে চারটি সিনেমা থিয়েটারের বাইরে তার দোকান হয়ে যায়। এগুলো থেকে বছরে তার আয় ছিল ১৪,০০০ ডলারেরও বেশি। আজকের দিনে যা ৩,৩৬,০০০ ডলারের সমান। এমনকি সেই মহামন্দার সময়েও তার ব্যবসা আরো বাড়তে থাকে।
থিয়েটার মালিকরা তখন বুঝতে পারেন, তারা যদি নিজেরাই পপকর্ন বিক্রি শুরু করেন সেটা আরো লাভজনক হবে তাদের জন্য। এমনই ভাবনা আসে এক থিয়েটার ম্যানেজারের মনে। তিনি হচ্ছেন আর জে ম্যাককিনা। ত্রিশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে কিছু সিনেমা থিয়েটার পরিচালনা করতেন। ম্যাককিনার একটি থিয়েটারের বাইরে এক বৃদ্ধ লোক পপকর্ন বিক্রি করতো। ঐ লোক পপকর্ন বিক্রি করে এতই লাভবান হয় যে সে একটি বাড়ি, একটি ফার্ম ও একটি দোকান কিনে ফেলে। তখন ম্যাককিনা একটি পপকর্ন মেশিন নিয়ে আসেন তার থিয়েটারে। এতে ১৯৩৮ সালে পপকর্ন থেকেই তার আয় হয় দুই লাখ ডলার। তখন থেকেই থিয়েটারগুলোতে শুরু হয় পপকর্নের ব্যবসা। পপকর্নের নিষেধাজ্ঞা আর থাকে না। ফলে এই মহামন্দার সময় পপকর্নই হয়ে ওঠে সিনেমাহলের রক্ষার ঢাল।
সিনেমা হলের বাইরে ভিড়
পপকর্নের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। পপকর্নের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল চকলেট ও কোমল পানীয়। এসব পণ্যের অন্যতম প্রধান কাঁচামাল হলো চিনি। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে আমেরিকায় চিনি আমদানি বন্ধ থাকে। তাই চকলেট ও পানীয় উৎপাদন কমে যায়। আর এই সুযোগে পপকর্ন আরো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। ১৯৪৫ সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে অর্ধেকেরও বেশি পপকর্ন বিক্রি হয় সিনেমা থিয়েটারে। থিয়েটারগুলো তখন পপকর্নের বিজ্ঞাপন প্রচার করা শুরু করে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ১৯৫৭ সালে প্রচারিত ৪০ সেকেন্ডের বিজ্ঞাপনচিত্র ‘লেটস অল গো টু দ্য লবি’। এর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করে ২০০০ সালে লাইব্রেরি অব কংগ্রেস একে ইউনাইটেড স্টেটস ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্ট্রিতে অন্তর্ভুক্ত করে।
আধুনিক সিনেমা হলগুলোতেও লভ্যাংশের একটি বড় অংশ আসে পপকর্ন থেকে। সিনেমা থিয়েটারগুলোতে গত কয়েক বছরে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আরামদায়ক বসার ব্যবস্থা, অ্যালকোহল ও অন্যান্য খাবারের ব্যবস্থা থাকলেও পপকর্ন এখনো তার আবেদন ধরে রেখেছে। অনেক সময় এর উচ্চমূল্যের কারণে সমালোচনা হয়। কিন্তু তারপরও সিনেমাহলে হাতে পপকর্ন না থাকলে যে কারো কাছে সিনেমা দেখা অপূর্ণতা মনে হয়।
- মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন
- কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার?
- আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র
- স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা
- দেশে ২৪ ঘণ্টায় ৫ মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫৬৪
- কিট যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে লবিং করেছেন শামসুল আলম ও সরদার সাদী
- ঢাকার বাইরের শ্রমিকদের আসার প্রয়োজন নেই, বেতন পৌঁছে দেওয়া হবে
- ধান কাটতে যাননি, ধানকাটা মেশিন নিয়ে হাজির মাশরাফী
- মাকে নিজের পাশে বসা দেখছিলেন, মৃত্যুর আগে ইরফান খান
- ইফতারে প্রাশান্তি দেবে দই বেলের লাচ্ছি
- মাত্র ৩৭ দিনে ভেন্টিলেটর বানিয়েছে নাসা
- দেশে প্রথম ব্যক্তি উদ্যোগে স্থাপিত করোনা টেস্টিং ল্যাব উদ্বোধন
- এমপিওভুক্ত হলো ১৬৩৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- একযোগে কাজের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে শেখ হাসিনাকে মোদির টেলিফোন
- মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ২৮ হাজার ছাড়াল
- ফুলগাজীতে মাদ্রাসা ছাত্র বলাৎকার মামলার আসামী এমরান গ্রেপ্তার
- ডাকাতিকালে ছাত্রী ধর্ষণ : জড়িত আরো এক আসামী গ্রেপ্তার
- ফেনীতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিলেন ৩৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা
- দাগনভুঞার বাড়িতেই চিকিৎসা নিবেন করোনা আক্রান্ত নারী
- সোনাগাজীর করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের নমুনা নেগেটিভ
- ফেনীতে করোনার নমুনা সংগ্রহ করবে স্বাস্থ্যকর্মীরা
- দাগনভুঞায় উপসর্গ ছাড়াই সরকারি কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত
- নিতান্ত বাধ্য না হলে বিদেশেই থাকার অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
- ফেনীতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিলেন ৩৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা
- আক্রান্ত নারী জায়লস্করের বাসিন্দা
- ফেনীতে সরকারি সহায়তা এসেছে ৭৭ লাখ টাকা ও ১৭শ ৪৮ টন চাল
- করোনা আক্রান্তের শরীরের অক্সিজেনের পরিমাণ ঘরেই পরীক্ষার উপায়
- দেশে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত, আরো ৮ মৃত্যু
- জামায়াত নেতার সঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহর যেসব কথা হয়
- বাইরের পোশাক শ্রমিকরা ঢাকায় আসবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী