যেভাবে করোনার সঙ্গে লড়াই করে ফিরলেন ঢাবি শিক্ষার্থী
ফেনীর হালচাল
প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২০
ইসতিয়াক আহমেদ হৃদয় নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী করোনা থেকে বেঁচে ফিরেছেন। করোনার দিনগুলোতে তার অভিজ্ঞতা নিয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি।
ভিডিওটির মাধ্যমে জানা যায়, গত ৮ এপ্রিল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানতে পারেন। এরপর ১৫ এপ্রিল আবার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হন। ভিডিওটিতে অভিজ্ঞতার শেয়ার করার পাশাপাশি করোনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করারও চেষ্টা করেন তিনি।
মুটোফোনে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ৬ এপ্রিল থেকে আমার হালকা জ্বর দেখা দেয়। একদিন পর দেখা যায় জ্বরের সঙ্গে সর্দি এবং হালকা কাশিও যুক্ত হয়েছে। এদিকে গ্রামের বাড়ি থেকে বাবা-মা বারবার ফোন করছিলেন বাড়ি যাওয়ার জন্য। তাই ভাবলাম আমার যেহেতু কয়েকটা করোনার উপসর্গ দেখা যাচ্ছে একজন সচেতন মানুষ হিসেবে পরীক্ষা করে তবেই বাড়িতে যাওয়া উচিৎ। তাছাড়া উপসর্গ কম থাকায় শুরুতে আইইডিসিআর আমাকে পরীক্ষা করতে চায়নি, পরে কয়েকবার বুঝিয়ে বলায় গত ৮ এপ্রিল দুপুরে আমার করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তারা। ঐদিন রাত বারোটা ছয় মিনিটে আমাকে ফোন দিয়ে জানানো হয় আমার করোনাভাইরাস পজিটিভ।
ফেসবুকে হৃদয়ের আপলোড করা ভিডিওতে তিনি যা যা বলেন, তা হুবহু ডেইলি বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য নিচে তুলে ধরা হলো:
"ভিডিওটি আপলোড দেয়ার পেছনে যে কারণ সেটা হচ্ছে, আমার করোনাভাইরাস পজিটিভ এসেছিলো। সেই পজিটিভ থেকে আজকে রেজাল্ট আসে নেগেটিভ। পজিটিভ হওয়ার পর থেকে আমি গত ৬-৭ দিন বাসায় ছিলাম। আজকে (১৫ এপ্রিল) আল্লাহর রহমতে নেগেটিভ আসে। আমি এই জায়গাটা থেকে আমার অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করতে চাচ্ছি আসলে। করোনাভাইরাস পজিটিভ হলে আমাদের কী করা উচিৎ বা আমার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলো কাজ করেছে।
আমি ইসতিয়াক আহমেদ হৃদয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি। আপনারা জানেন এরইমধ্যে করোনাভাইরাস বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করেছে। তো আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে তেতাল্লিশ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের অধিকাংশই নিজ নিজ জায়গায়,নিজ নিজ জেলায় বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজ করছে, সেবামূলক কাজ করছে। ত্রাণ বিতরণ করছে। তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমিও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না। আমি ক্যাম্পাসে অবস্থান করেছি এবং বিগত কয়েকদিনে বেশ কিছু জায়গায় ত্রাণ বিতরণ করেছি। টিএসসিতে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। নিজের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করেছি।
তাছাড়া আপনারা জানেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তিনশ থেকে চারশর মতো যে অবলা কুকুর বিড়াল রয়েছে সেগুলোকে গত মার্চ মাসের ২১ তারিখ থেকে খাওয়ানোর কাজটা আমি করে আসতেছিলাম, কয়েকজন ভলেন্টিয়ারসহ। তো এই কুকুর বিড়ালগুলোকে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেখাশোনা করা, তারপর ত্রাণ বিতরণ করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ অন্যান্য জিনিস বিতরণ করা এই কাজগুলোর জন্য আমাকে ম্যাক্সিমাম সময় (অধিকাংশ সময়) আমাকে ঘরের বাইরে থাকতে হয়েছে। যে সময়ে আসলে আমার ঘরে থাকা উচিত ছিল।
আমার বাবা মা দেশের বাড়ি থেকে প্রতিদিন ফোন দিতেন বাসায় যাবার জন্য। একটা পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিলাম বাসায় যাব, কিন্তু মনে হলো আমাকে টেস্ট করে যেতে হবে। টেস্ট করা ছাড়া ঢাকা থেকে আমি আমার এলাকায় যাব এটা একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার বা আপনার কারোরই উচিৎ না।
সেই দায়বদ্ধতা থেকে টেস্ট করাতে গেলাম আনফরচুনেটলি (অপ্রত্যাশিতভাবে) আমার পজেটিভ চলে আসে। রাত ১২টার দিকে আইইডিসিআর থেকে ফোন দিয়ে আমাকে বলে আপনার করোনাভাইরাস পজেটিভ। পজেটিভ আসার পরে সঙ্গে সঙ্গে যেটি করেছি সেটি হচ্ছে- আমার এটাচমেন্টে (সংস্পর্শে) বিগত কয়েকদিন যারা ছিল তাদেরকে ফোন দিয়ে, ম্যাসেজ দিয়ে বিষয়টা জানিয়ে দিই। তাদের বলেছি সন্দেহ হলে আপনারা টেস্ট করাতে পারেন অথবা কোয়ারেন্টিনটা মানার চেষ্টা করেন। কারণ আমার জন্য কেউ আক্রান্ত হোক এটা আমি কখনই চাই না,বা সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার বিবেকবোধ থেকেও আমি সেটা করব না। আশা করি আপনারাও সেটা করবেন না।
আমার পজেটিভ আসে গত ৮ এপ্রিল। তারপর ১৪ এপ্রিল আবার স্যাম্পল দিয়ে আসি। আজ (১৫ এপ্রিল) দুপুর বেলা আমাকে জানানো হয় আমার করোনাভাইরাস নেগেটিভ। তো পজেটিভ থেকে নেগেটিভে আসলো কীভাবে সেটিই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে চাই। আমি কী কী করেছি সেই অভিজ্ঞতা জানাতে চাই এই কারণে যে , অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। মারা যাচ্ছেন। যারা মারা যাচ্ছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
আল্লাহ না করুক, যদি কেউ ইনফ্যাক্টেড (আক্রান্ত) হয়ে যান, সেক্ষেত্রে কী করা উচিৎ আমি আমার অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করছি। তো প্রথমে আমি যেটা করেছি আমার সংস্পর্শে যারা ছিলো তাদের জানিয়ে দিয়েছি।
দ্বিতীয়ত আমি নিজেকে একটি ঘরে একা আবদ্ধ করে ফেলি। আমার সংস্পর্শে কাউকে আসতে দিইনি। একেবারেই একা ছিলাম। এরপর আমি প্রতিদিন যখন গোসল করতাম তখন পানি গরম করে নিতাম। সেই পানিতে স্যাভলন মিশিয়ে গোসল করেছি। স্বাভাবিকভাবেই স্যাভলন পানি দিয়ে গোসল করা ভালো। এই সময়টাতে অবশ্যই গরম পানিতে স্যাভলন মিশিয়ে গোসল করবেন। এটি জীবাণুনাশের জন্য অনেক ভালো কাজে দেবে।
এরপর আমি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়াম করতাম। তার পরপরই গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করতাম। গরম পানি যতটুকু গলায় সহ্য করা যায়। সেই পরিমাণ গরম পানি সাথে লবণ দিয়ে গড়গড়া করতাম। প্রতিদিন দুপুরে এবং ঘুমানোর আগে প্রতিদিন এটি তিনবার করতাম।
আর একটি ব্যাপার যেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে মনে হয়েছে এবং বেশি কাজে দিয়েছে আমার মনে হয়। সেটা হলো প্রতি এক ঘণ্টা পরপর গরম পানি খাওয়া। যতটা গরম আপনি সহ্য করতে পারেন, আমি এক ঘণ্টা পরপর এক-দুই গ্লাস করে গরম পানি খেতাম। আমার মনে হয় এটি খুব বেশি কাজে দিয়েছে আমার ভাইরাস দূর করার জন্য।
আর যেগুলো আমরা জানি- এক ঘণ্টা পরপর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে। যেটি আমি সব সময় করেছি। সব সময় সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতাম। আমার কাপড়-চোপড়গুলো পরিষ্কার করে রাখতাম। রুমটা খুব ভালোভাবে স্যাভলন পানি দিয়ে প্রতিদিন পরিষ্কার করেছি।
আর খাবারের ক্ষেত্রে সব রকম খাবার খাওয়া যাবে। যেটা আইইডিসিআর থেকে আমাকে বলেছে। খাবার নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। যেকোনো খাবার খেতে পারেন। তবে ভিটামিন সি টা বেশি রাখা ভালো। আমি ট্যাবলেট কেভিট –সি টা খেয়েছি। ১০ ট্যাবলেট থাকে। আমি ৬টা খেয়েছি মাত্র। আর খাওয়া লাগেনি।
এছাড়া কমলালেবু, লেবুর শরবত, আপেল, মালটা, নাশপাতি। যেগুলো আমি খেয়েছি। এগুলো সবাই যে খেতে পারবে তা কিন্তু নয়। অনেক দরিদ্র লোকজনের পক্ষে সম্ভব নয়। তো এক্ষেত্রে কোনো গরিব মানুষ যারা প্রত্যন্ত অঞ্চলের। তারা যদি কেউ আক্রান্ত হন তাহলে তাদের বলব, আপনারা প্রতি এক ঘণ্টা পরপর সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলবেন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবেন। গরম পানি খাবেন। তিনবেলা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করবেন। যদি কারো কোনো কারণে পজেটিভ চলে আসে ভয়ের কোনো কারণ নেই, ইনশাআল্লাহ্ নেগেটিভ চলে আসবে।
এটা ছিল আমার অভিজ্ঞতা। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে চাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন। কারো ভাইরাস পজেটিভ হয়ে গেলেও ভয়ের কোনো কারণ নেই। একেবারেই ভেঙে পড়ার কোনো কারণ নেই। শুধু সচেতন থাকুন। নিজেকে একটি রুমে আবদ্ধ করে ফেলুন। আর সবকিছু মেনে চলুন। পজেটিভ হলেও পরে নেগেটিভ চলে আসবে আল্লহর রহমতে। আমার যেমন ৫ -৬ দিন সময় লেগেছে । আপনাদেরও এমনই সময়ের ভেতরই ভালো হয়ে যাবে।
আর সবশেষে আপনাদের কাছে করজোড়ে অনুরোধ করি। দয়া করে এই সময়টাতে ঘরে থাকুন। নিজে বাঁচুন, আপনার পরিবারকে বাঁচান। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে বাঁচান। আমার জন্য দোয়া করবেন।
ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন
- মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন
- কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার?
- আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র
- স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা
- দেশে ২৪ ঘণ্টায় ৫ মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫৬৪
- কিট যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে লবিং করেছেন শামসুল আলম ও সরদার সাদী
- ঢাকার বাইরের শ্রমিকদের আসার প্রয়োজন নেই, বেতন পৌঁছে দেওয়া হবে
- ধান কাটতে যাননি, ধানকাটা মেশিন নিয়ে হাজির মাশরাফী
- মাকে নিজের পাশে বসা দেখছিলেন, মৃত্যুর আগে ইরফান খান
- ইফতারে প্রাশান্তি দেবে দই বেলের লাচ্ছি
- মাত্র ৩৭ দিনে ভেন্টিলেটর বানিয়েছে নাসা
- দেশে প্রথম ব্যক্তি উদ্যোগে স্থাপিত করোনা টেস্টিং ল্যাব উদ্বোধন
- এমপিওভুক্ত হলো ১৬৩৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- একযোগে কাজের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে শেখ হাসিনাকে মোদির টেলিফোন
- মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ২৮ হাজার ছাড়াল
- ফুলগাজীতে মাদ্রাসা ছাত্র বলাৎকার মামলার আসামী এমরান গ্রেপ্তার
- ডাকাতিকালে ছাত্রী ধর্ষণ : জড়িত আরো এক আসামী গ্রেপ্তার
- ফেনীতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিলেন ৩৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা
- দাগনভুঞার বাড়িতেই চিকিৎসা নিবেন করোনা আক্রান্ত নারী
- সোনাগাজীর করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের নমুনা নেগেটিভ
- ফেনীতে করোনার নমুনা সংগ্রহ করবে স্বাস্থ্যকর্মীরা
- দাগনভুঞায় উপসর্গ ছাড়াই সরকারি কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত
- নিতান্ত বাধ্য না হলে বিদেশেই থাকার অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
- ফেনীতে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিলেন ৩৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা
- আক্রান্ত নারী জায়লস্করের বাসিন্দা
- ফেনীতে সরকারি সহায়তা এসেছে ৭৭ লাখ টাকা ও ১৭শ ৪৮ টন চাল
- করোনা আক্রান্তের শরীরের অক্সিজেনের পরিমাণ ঘরেই পরীক্ষার উপায়
- দেশে ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত, আরো ৮ মৃত্যু
- জামায়াত নেতার সঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহর যেসব কথা হয়
- বাইরের পোশাক শ্রমিকরা ঢাকায় আসবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী