ব্রেকিং:
মাওলানা ত্বহার হোয়াটসঅ্যাপ-ভাইভার অন; বন্ধ মোবাইল ফোন কে এই মাওলানা ত্বহার ২য় স্ত্রী সাবিকুন নাহার? আওয়ামীলীগের ধর্মীয় উন্নয়নকে ব্যাহত করতে ত্বহা ষড়যন্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে প্রতারণা ফেনীতে করোনার নমুনা সংগ্রহ করবে স্বাস্থ্যকর্মীরা ফেনীর বিভিন্নস্থানে মোবাইল কোটের অভিযান : ১৪ জনের দন্ড ফেনীতে কৃষকের ধান কেটে বাড়ি পৌছে দিয়েছে ছাত্রলীগ করোনার তাণ্ডবে প্রাণ গেল ২ লাখ ১১ হাজার মানুষের ফেনীর ৭ সরকারি কলেজের একদিনের বেতন ত্রাণ তহবিলে ফেনী ধলিয়ায় গ্রাম পুলিশের বাড়িতে হামলা, আহত ২ মানসম্মত কোন ধাপ অতিক্রম করেনি গণস্বাস্থ্যের কিট পরিস্থিতি ঠিক না হলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব স্কুল-কলেজ বন্ধ আপনিকি করোনা পরীক্ষায় গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের কিট ব্যবহারের বিপক্ষে? ফেনীতে বাড়তি দামে পণ্য বেচায় ৭ দোকানের জরিমানা দেশে করোনায় আক্রান্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার, একদিনে মৃত্যু ৫ যুক্তরাষ্ট্রে করোনা জয় করলেন ১ লাখেরও বেশি মানুষ ফেনীতে গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার ফেনী শহরে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার প্রদান ফেনীতে ডাক্তারদের সুরক্ষা ও রোগীদের চিকিৎসা সামগ্রী দিয়েছে বিএমএ করোনায় মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৯২ হাজার ছাড়ালো
  • শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বিলুপ্তির পথে ছাগলনাইয়ার মৃৎ শিল্প

ফেনীর হালচাল

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০১৯  

কালের আবর্তনে ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প। এক সময় উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ আঁধারমানিক গ্রামসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় শত শত পরিবার প্রত্যক্ষভাবে এ শিল্পের সাথে জড়িত ছিল। আধুনিকতার ছোঁয়া ও কালের পরিক্রমায় আঁধার মানিক গ্রামের ঐতিহ্যবাহী পাল বংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে এখন মাত্র ১০ থেকে ১৫ পরিবার অনেক কষ্টে তাদের পূর্বপুরুষদের এ পেশাকে ধরে রেখেছেন। পুরুষরা অনেকে এ পেশা ছেড়ে ভিন্ন পেশায় চলে গেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই পুরুষ ও মহিলা শিল্পীরা হাতের ছোঁয়ায় সুনিপুণভাবে মাটি দিয়ে চাক ও অত্যাধুনিক মেশিনের সাহায্যে যাবতীয় মৃৎশিল্প তৈরী করে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ছাগলনাইয়া উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের উত্তর আঁধার মানিক গ্রামের মৃত চিত্ত রঞ্জন পালের ছেলে অর্ধশত বছর বয়সী দুলাল পাল বাড়িতে মেশিনের সাহায্যে কারুকার্যখচিত সুনিপুণভাবে মৃৎ শিল্প তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে দুলাল পাল বলেন, ১৯৮২ সাল থেকে পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া এই পেশাকে ধরে রেখেছেন তিনি। মৃৎ শিল্প তৈরির মূল উপকরন হল মাটি।

এক সময় বিনে পয়সা মাটি পাওয়া গেলেও বর্তমানে টাকার বিনিময়েও মাটি পাওয়া যাচ্ছে না আবার যা পাওয়া যাচ্ছে তা অধিক মূল্য দিয়ে কিনতে হচ্ছে। প্রতি ট্রাক মাটি ক্রয় করতে তার খরচ পড়ে প্রায় তিন হাজার টাকা। এরপর মাটিকে বালু ও পানির সাথে মিশ্রিত করে ওই মাটি দিয়ে প্রতিদিন মেশিনের সাহায্যে মাটির ফিল্টার, কলস, হাড়ি, পাতিল, ব্যাংক, বিভিন্ন পিঠা তৈরীর চাঁচ, পুতুল, বধনা, দৈয়ের পাত্র, প্রদীপ, ফুলের টপ, পাখির বাসা, ভাপা পিঠার বাটি, বাসন, কয়েলের বাটি সহ ২৫ থেকে ৩০ টি পন্য তৈরি করেন। প্রতিটি মাটির ফিল্টার ও কলস তৈরি করতে তার সাত কেজি মাটি লাগে। এরপর তা সপ্তাহ খানেক রোদে শুকিয়ে জলন চুল্লীতে দিয়ে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা আগুনে পোড়ানো হয়।

সেখান থেকে তৈরি করা পন্যগুলো চুন চুর্কি দিয়ে লালচে করে পাইকারি দামে বিক্রি করেন। তিনি আরো বলেন, সব কিছুর দাম যে অনুপাতে বেড়েছে সে অনুপাতে মাটির তৈরি সামগ্রীর দাম বাড়েনি। পূর্ব পুরুষের এই পেশা বাঁচিয়ে রাখতে গিয়ে দ্রব্য মূল্যের উর্দ্ধগতির বাজারে পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটছে তার। বর্তমানে মাটির তৈরি তৈজসপত্রের স্থান দখল করে নিয়েছে আধুনিক প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি সামগ্রী। এসব সামগ্রীর দাম অনেক বেশি হলেও অধিক টেকশই হওয়াতে মানুষ মাটির তৈজসপত্র না কিনে প্লাস্টিক, মেলামাইন ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি সামগ্রী ক্রয়ের দিকে আগ্রহী হচ্ছে। কিন্তু মাটির তৈরী জিনিসপত্র সে রকম দামে বিক্রি করতে পারছেন না। মাটির এ সকল পাত্রের চাহিদাও আগের মত নেই।

দুলাল পাল সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা, বেসরকারীভাবে সহযোগিতা ও একটি পানির টিউবওয়েল পেলে হারিয়ে যাওয়া মৃৎ শিল্পের অতীত ঐতিহ্য পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে এমনটি আশা করছেন তিনি।

মাটির ফিল্টার কিনতে আসা ফেনী সরকারি কলেজ ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোস্তাক হোসেন সোহেল বলেন, একসময় উত্তর ও দক্ষিন আঁধার মানিক গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার সুনিপুণভাবে হাত দিয়ে মাটির তৈরি মৃৎ শিল্পের কাজ করতেন। কিন্তু এখন আধুনিকতার ছোঁয়া ও কালের পরিক্রমায় বিলুপ্তির পথে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প। ফলে মৃৎ শিল্পের নিপূন কারিগরেরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে আজ অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল বলেন, এখানকার তৈরী মৃৎ শিল্পের অনেক সুনাম ও সুখ্যাতি রয়েছে। হারিয়ে যাওয়া মৃৎ শিল্পের অতীত ঐতিহ্য পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে দুলাল পালকে একটি পানির টিউবওয়েল সহ উপজেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান।

ফেনীর হালচাল
ফেনীর হালচাল